জামালপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের লাঠিচার্জে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক আহত




স্টাফ রিপোর্টার:

জামালপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধসহ পুলিশের লাঠিচার্জে সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাঞ্ছিত হয়।   

বুধবার রাতে জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের নান্দিনা পূর্ব বাজারের গোলাম আলী মার্কেটে ও খড়খড়িয়া এলাকায় জামালপুর- ৫ সদর আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনুর দুইটি নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের নৌকার সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা। এরপর একই ইউনিয়নের মহেশপুর কালিবাড়ীতে আরও একটি নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে নৌকার সমর্থকরা। হামলায় মহেশপুর এলাকার ঈগল প্রতীকের সমর্থক খোকা(৬৫), দুদু(৫৫), শফিক(৩৫), ইয়ার আলী(৫০)সহ দিলবাহার(৫০) নামে এক নারী পথচারী আহত হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ঈগলের সমর্থকরা প্রায় দুই ঘন্টা জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরকত উল্লাহর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেয়ার সময় পুলিশ ও র‌্যাবের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জের শিকার হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরকত উল্লাহ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সুরুজ্জামান ফকির। এছাড়াও চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাম্যান বেলাল হোসেন শান্ত, এনটিভি ও খবরের কাগজের সাংবাদিক আসমাউল আসিফ, শ্রমিক বার্তার আশিক মাহমুদ, দেশ সংবাদের সালাউদ্দিন মিঠু, বিজয় বাংলাদেশের নিপুন জাকারিয়াসহ ৫ জন সাংবাদিক ও অন্তত ১০ জন ঈগলের সমর্থক পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত অবস্থায় চ্যানেল আইয়ের ক্যামেরাম্যান বেলাল হোসেন শান্ত ও শ্রমিক বার্তার আশিক মাহমুদসহ অন্যান্যদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু বলেন, জামালপুর সদরে লেভেল প্লেইং ফিল্ড অনুপস্থিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন নৌকার প্রার্থীর যে সুবিধা পাবেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও সেই সুবিধা পাবেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছি। তিনি দাবী করেন নৌকার সমর্থকরা তার তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে, তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। অসংখ্য ভোটারদের সশ্রস্ত্র অবস্থায় আক্রমণ করা হয়েছে। এসিল্যান্ডসহ আমি যখন অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য ভূমিকা নেই তখন হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা হঠাৎ করে জনগণের উপর আক্রমণ করে বসে এবং আমার সামনে এসিল্যান্ড ও সাংবাদিকদের আঘাত করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই, এটা মাস্টারপ্ল্যান আমার ভোটার উপস্থিতি কমিয়ে দেওয়ার জন্য ও নৌকার ভরাডুবি যখন সুনিশ্চিত, আমার জয় যখন নিশ্চিত সেখানে তারা এ ধরণের অপকৌশল হাতে নিয়েছে।          

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক লুৎফুর কবীর বাবুর নেতৃত্বে আমাদের নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলায় আমাদের শ্যামল, সীমান্ত, সিফাত, পুলক ও আলী নামে পাঁচজন কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, মহেশপুর কালিবাড়ীতে তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও একটি নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভাংচুরের ঘটনা শুনে পরিদর্শন করেছি। মোটরসাইকেল তিনটি কার আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জামালপুর ট্রিবিউন/আবু সাঈদ


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন