স্টাফ রিপোর্টার:
জামালপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। মৃত রোগীর স্বজনদের হামলায় ইন্টার্ন চিকিৎসক আহতের ঘটনায় কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্নরা। এই ঘটনায় মৃত রোগীর ছেলেকে পুলিশ আটক করে ও রোগীর মৃত্যুর ৮ ঘন্টা পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে জামালপুর পৌর এলাকার রশিদপুর গ্রামের গুল মাহমুদকে (৬০) অসুস্থ অবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে তার স্বজনরা। পরে রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের উপর চড়াও হয়, এ সময় অন্য ওয়ার্ড থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মেডিসিন ওয়ার্ডে গেলে তাদের উপরও স্বজনরা হামলা করে ও চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করে। এতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মঞ্জুরুল হাসান জীবন, ডা. ফহমিদুল ইসলাম ফাহাদ ও ডা. তুষার আহমেদ আহত হয়। এদিকে, চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করে মৃতের স্বজনরা জানায়, মৃত্যুর পর গুল মাহমুদের মরদেহ হাসপাতালে না পেয়ে খোজাখুজির এক পর্যায়ে তার দুই ছেলে হায়দার ও হাফিজের সাথে হাসপাতালের স্টাফদের বাকবিতন্ডা হয়। এই কারণে মধ্যরাতে মৃত্যু হলেও দুপুর পর্যন্ত মরদেহ আটকে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছেলেকে গ্রেফতার করা হলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে অভিযোগ করে স্বজনরা।
অপরদিকে, সকল হামলাকারীদের গ্রেফতার, শাস্তি ও ইন্টার্নদের নিরাপত্তার দাবীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। পরে দুপুরে মৃতের ছেলে হায়দার হাসপাতালে তার বাবার মরদেহ নিতে আসলে পুলিশ তাকে আটক করে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে মৃত্যু হলেও মৃত গুল মাহমুদের ছেলেকে পুলিশ আটক করায় ৮ ঘন্টা পর দুপুর ১২টার দিকে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান জানান, হাসপাতালে রোগীকে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করাতে রোগীর দুই ছেলে হায়দার ও হাফিজ চিকিৎসকদের উপর হামলা করে ও চিকিৎসকদের কক্ষ ভাঙচুর করে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছি। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তার দাবীতে কর্মবিরতি শুরু করেছে। ইন্টার্নদের কর্মবিরতির জন্য চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যহত হচ্ছে, তবে অন্যান্য চিকিৎসদের দিয়ে সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মৃত ব্যাক্তির নিকট আত্মীয় না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি, যখন স্বজনরা এসেছে তখন তাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, এই ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, একজনকে আটক করা হয়েছে, পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জামালপুর ট্রিবিউন/শাকিল আহমেদ
0 মন্তব্যসমূহ