জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রপ্তানিমুখী একটি প্রতিষ্ঠানের জমি জবরদখল করে একটি চক্র রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৯ মার্চ ‘দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি.’ এর এজিএম আতিকুর রহমান এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগে আতিকুর রহমান (এজিএম) জানান, স্থানীয় সাবেক বিজিএমসি কলোনিতে ৩০-৩৫টি পরিবার কয়েক বছর ধরে দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি. এর জমিতে বসবাস করে আসছে। বসবাসের সুযোগে তারা ওই জমিতে মাদকের রমরমা ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। সেখানে প্রকাশ্যে চোলাই মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজাসহ নানা মাদকের কেনাবেচা ও সেবন চলে। সহজলভ্য হওয়ায় উঠতি বয়সের ছেলেরা এসবে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে প্রতিদিন বেড়েই চলছে বিভিন্ন অপরাধ।
বিষয়টি বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ এমপিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করা হয়েছে। বর্তমান সাংসদের সহযোগিতায় ওই জমিতে প্রাচীর নির্মাণ করা গেলেও এখনো দখল ও মাদকমুক্ত করা যায়নি।
কলোনিতে বসবাসকারী বুলবুলি চৌহানী, ললিতা চৌহানী, মহন চৌহানী, সন্ধা রবিদাসসহ অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই কলোনিতে বসবাস করে আসছি। বাসফৌর সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার মদ বেচাকেনার সাথে জড়িত। তাদের কারণে আমাদেরও মাদক ব্যবসায়ী সাজানো হচ্ছে। এ কারণে কলোনির জায়গা থেকে কারখানার এজিএম আতিকুর রহমান আমাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বাসন্তি ও শীলা বাসফৌর বলেন, দুইদিন আগে আমাদের স্বামীদের আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ। আমরা সুইপারের কাজ করি। মদ আমরা নিজেরা একটু আকটু খাওয়ার জন্য তৈরি করি। আমরা মদ বিক্রি করি না।
এ ব্যাপারে কারখানার এজিএম আতিকুর রহমান বলেন, এলাকার ও প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি করতে এ কারখানা এলাকাকে মাদক ও দখলমুক্ত করা অতি জরুরি। তা না হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের মুখ ফিরিয়ে নিবে। এতে কারখানা কর্তৃপক্ষ সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। দেশ হারাবে বৈদেশিক মুদ্রা।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিন আগেও কলোনিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫ লিটার চোলাই মদসহ দুই জনকে আটক করা হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি. এর জায়গা দখল করে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে কলোনির কিছু বাসিন্দা। এ ব্যাপারে কারখানার কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সাথে কথা বলে এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রশিদ এমপির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে বসবাসকারীদের অন্যত্র আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জামালপুর ট্রিবিউন/শাকিল আহমেদ