জামালপুর ট্রিবিউন ডেস্ক:
ফাইল ছবি |
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘দায়মুক্তি’ নামের ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ -এর দুটি ধারা-উপধারা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই রায় দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ। রিটের পক্ষে আদালতে রুল শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম। অবৈধ ঘোষণা করা ধারা দুটি হচ্ছে— জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রীর একক ক্ষমতা সংক্রান্ত ৬ (২) উপধারা এবং দায়মুক্তি সংক্রান্ত ৯ ধারা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি পাশ করা হয় ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর। জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে দরপত্র ছাড়াই প্রকল্প নেওয়ার সুযোগ রাখা হয় আইনে। এছাড়া এ আইনের আওতায় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, সে বিধানও রাখা হয়। তাই আইনটি সে সময় ‘দায়মুক্তি’ আইন নামে পরিচিতি পায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ আগস্ট আইনটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট আইনটির ৬ (২) উপধারা ও ৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক ও আইনজীবী মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ। এ দুটি ধারা ধারাকে সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় রিটে। গত ২ সেপ্টেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। আইনটির ‘পরিকল্পনা বা প্রস্তাবের প্রচার’ সংক্রান্ত ৬ (২) উপধারা ও ‘আদালত, ইত্যাদির এখতিয়ার রহিত করা’ সংক্রান্ত ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)’র চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত। সেই রুলে চূড়ান্ত শুনানি পর ধারা-উপধারা দুটি অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করলেন উচ্চ আদালত। আইনটির ৬ (২) উপধারায় বলা আছে- ‘উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যে কোন ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫ এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিত সংখ্যক অথবা একক কোন প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ ও দরকষাকষির মাধ্যমে উক্ত কাজের জন্য মনোনীত করিয়া ধারা ৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।’ আর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোন কার্য, গৃহীত কোন ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’
সূত্র: কালের কন্ঠ
0 মন্তব্যসমূহ